সারাবিশ্ব: প্রায় দুই বছর আগের কথা। চাকরির প্রয়োজনে গ্রীস ভ্রমণে যান লিসা ক্যাম্পবেল নামে এক নারী। গ্রীসের বন্যাকবলিত একটি এলাকার শরণার্থীদের নিয়ে তার কাজ। সেখানে পা রাখার পর থেকেই কেন জানি মানুষগুলোর প্রতি তার ভালোবাসা জন্মে।
এই টানেই তিনি নিজের চাকরি বাদ দিয়ে শরণার্থী শিবিরে দীর্ঘদিন কাটিয়েছেন। তাদের সঙ্গে নিজের দুঃখ কষ্টগুলো ভাগ করে নিয়েছেন। শেষমেশ যখন শরণার্থী ক্যাম্প ছেড়ে বাড়ি ফিরে আসেন লিসা, তখন অনেকটা দুষ্টুমির ছলে তার স্বামী তাকে বলেন, ‘বাড়ি গিয়ে কী কাজ করবে? ক্যাম্পে তো তুমি দুই হাজারের বেশি সন্তানের মা হিসেবে ছিলে।
বিবিসিকে দেয়া সাক্ষাৎকারে ক্যাম্পে ফেলে আসা দিনগুলোর স্মৃতি রোমন্থন করেছেন লিসা ক্যাম্পবেল। শুরুর দিকে বেশ আনন্দে কাটে তার। তবে মাঝেমধ্যে মানুষগুলোর কষ্টে ব্যথিত হতেন লিসা। এক সকালে ঘুম থেকে উঠে দেখেন নৌকায় করে উপচে পড়া মানুষ ক্যাম্পের দিকে আসছে। মনে হয় এই বুঝি ডুবে যাবে এটি।
প্রথম মাস যাওয়ার পর লিসা একজন ডোনার পেয়ে যান। এরপর তিনি চাকরি থেকে অব্যাহতি নেন এবং আরো ভালো করে মন দেন শরণার্থী শিবিরে। দিন যত যায়, ততই ক্যাম্পের মানুষগুলোকে আপন মনে হয় লিসার। ‘আমার কাছে কাজটা মায়ের মতোই মনে হয়েছে। একজন মা যেভাবে তার সন্তানদের দেখভাল করে ঠিক এমনটা আমার সঙ্গেও হয়েছে।
ক্যাম্প বন্ধ হওয়ার খবর শুনে অনেকেই আমার কাছে এসে ভিড় করেছে। তারা বলতে থাকে, ‘আপনি আমাদের মায়ের মতো। আপনি কোথাও যাবেন না। আপনাকে ছাড়া আমরা থাকতে পারব না।’ তখনই আমি ভাবলাম, ‘আমার লক্ষ্য পূরণ হয়েছে। আসলে তাদের সঙ্গে কাটানোর সময়টা আমি কোনোদিন ভুলতে পারব না।’ যাবার বেলায় আরেকটা স্মৃতি আমাকে বেশ আবেগময় করে তোলে। ‘মুস্তফা নামের ছোট্ট একটি শিশু আমি চলে যাবো এই খবর শুনে আমার সাথে ক্যাম্প ছাড়ার জন্য হইচই শুরু করে দেয়। আমি তাকে বুকে জড়িয়ে বিদায় জানিয়েছি।